আলিপুরদুয়ার , ৯ অগাস্ট : বিশ্ব আদিবাসী দিবসে নয়া বিতর্ক প্রকাশ্যে এল ডুয়ার্সে । তৃণমূল ঘনিষ্ঠ আদিবাসী নেতা রাজেশ লাকড়া ওরফে টাইগার ও গ্রেটার কোচবিহার নেতা বংশীবদন বর্মণ আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ার এক সমাবেশ থেকে নতুন করে আদিবাসীদের জন্য পঞ্চম তপশিল ও গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে সরব হওয়ায় , রীতিমতো অস্বস্তি তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে । ডুয়ার্সের দুই গোষ্ঠীর জোড়াল দাবি প্রকাশ্যে আসায় স্থানীয় রাজনীতিতে ফের নয়া সমীকরণ তৈরি হ’ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । বংশীবদন বর্মনের স্পষ্ট দাবি ‘আমাদের দাবি কোচবিহার রাজ্যের ভারত ভুক্তির চুক্তি অনুযায়ী গ্রেটার কোচবিহার ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত রাজ্য । অসমের অবিভক্ত গোয়ালপাড়া জেলা ও মালদা বাদে উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলা গুলি নিয়ে ওই রাজ্য গঠিত হওয়া কথা ভারতীয় সংবিধানেই বলা আছে । অথচ রাজবংশী এবং আদিবাসীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে । এবার আর এটা হবে না । আমরা দাদা বুঝি না , দিদি ও বুঝি না। আমাদের জনগোষ্ঠীর যে ভাল করবে আমরা তার সঙ্গে থাকব।” সোমবার বীরপাড়ার ৫ নম্বর শ্রমিক লাইনের ফুটবল মাঠে বিশ্ব আদিবাসী দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ওই মন্তব্য করেন রাজবংশী ডেভলপমেন্ট এন্ড কালচারাল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলনের নেতা বংশীবদন বর্মণ ।
” উত্তরবঙ্গের মাটির মালিক আদিবাসী এবং রাজবংশী সম্প্রদায় । ওই মাটির মালিক হওয়া সত্ত্বেও আজ আমরা দিশেহারা । আমারা যোগ্য মান , সন্মান পাচ্ছিনা । আদিবাসী এবং রাজবংশীরা তাদের অধিকার বুঝে নেবে । আমরা এবার এক হয়েছি । সংবিধান মেনেই আমাদের অধিকার দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বংশীবদন বর্মণ।
ডুয়ার্সের অন্যতম আদিবাসী মুখ তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রাজেশ লাকড়া বলেন “এবার থেকে উত্তরবঙ্গে বংশীবদন বর্মন এবং রাজেশ লাকড়া শেষ কথা বলবে । বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে রাজবংশী সম্প্রদায় এবং আদিবাসীরা এক জোট হয়ে ওই বার্তাই দিতে চাই।” রাজেশ লাকড়া আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলার পৃথক রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করেন না বলে মন্তব্য করেন , একই সুর শোনা যায় বংশীবদনের গলাতেও । রাজেশ বলেন “জন বারলা ১৮৭৪ সালে স্বীকৃত পঞ্চম তপশিলে কী আছে তা জানেনা । জন বারলার দাবি কোনো নতুন দাবি নয় ।”
যৌথ মঞ্চে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিত থাকা তো দূরের কথা , মঞ্চ অথবা র্যালির আশপাশে ছায়াও দেখা যায়নি শাসক দলের । ছোট-বড় ও মাঝারি মাপের নেতাদের । শাসক দলকে ওই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কিনা সেই প্রসঙ্গও স্বযত্নে এড়িয়ে যান রাজেশ লাকড়া ও বংশীবদন বর্মণ।
তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী জানিয়েছেন “বীরপাড়ার সমাবেশ থেকে ঠিক কী ধরনের দাবি তোলা হয়েছে আমি তা নিজে কানে শুনিনি । ওই বিষয়ে আমার দলের লোক হওয়া সত্ত্বেও রাজেশ লাকড়া কোনো তথ্য জানায়নি, এমনকি বংশীবদন বর্মণও কোনো কথা বলেননি । তবে আমাদের দল যে কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে মদত দেওয়ার বিরোধী । বিষয়টি আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব । তারপর আগামী পদক্ষেপ ঠিক করবেন তারাই।”