শিলিগুড়ি , ২৬ মে : নেশার ঘোরে এমন আচরণ ও এত সুন্দর গল্প বানিয়ে বলা কিভাবে সম্ভব মহিলার আচরণে আশ্চর্য শিলিগুড়ি পুলিশ।
গতকাল দুপুর নাগাদ এক মহিলাকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সামনে। স্থানীয়দের বক্তব্য ছিল তিন জন যুবক তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় মানুষ ও বিশিষ্ট সমাজসেবী মদন ভট্টাচার্য সেই মহিলাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। অজ্ঞান মহিলার সামান্য জ্ঞান ফিরতেই সে মহিলা জানায় তার নাম শোভা দাস।বাড়ি অসমে এবং শ্বশুর বাড়ি আলিপুরদুয়ার জেলায় । তাকে অসম থেকে কাজের লোভ দেখিয়ে একদল নিউ কোচবিহার স্টেশনে নিয়ে আসে,নিউ কোচবিহার স্টেশন এ নিয়ে এসে সেই দল নাকি এই মহিলাকে তিনজন যুবক ও দুজন মহিলার হাতে তুলে দেয়। সেই তিনজন যুবক ও দুজন মহিলা মোট পাঁচজন মিলে তাকে নিয়ে আসে শিলিগুড়িতে। শোভা দাস নামক সেই মহিলাকে অসম থেকে শিলিগুড়ি নিয়ে এসে এই তিনজন যুবক ও দু ‘জন মহিলা মিলে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালায় মহিলার উপর। বহুবার নাকি নেশাও করানো হয়েছে তাকে। স্বাভাবিকভাবেই মহিলার মুখে এই গল্প শুনে পুলিশ ও সমাজসেবী মদন ভট্টাচার্যের প্রাথমিক অনুমান হয় বড় কোনো পাচার চক্রের হাতে পড়েছে এই মহিলা। গতকাল নেশাগ্রস্ত অজ্ঞান অবস্থায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল এই মহিলা। মহিলার মুখে এই গল্প শুনে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ নামে তদন্তে ।
কিন্তু আশ্চর্য ঘটনা তদন্তে নেমেই পুলিশ জানতে পারে নতুন এক তথ্য। কোন পাচারকারীর চক্রের হাতে পড়েনি এই মহিলা। নিজের থেকে মদ্যপান করে অসুস্থ হয়ে অমানুষিক আচরণ করার পাশাপাশি এত সুন্দর গল্প বানিয়ে বলছিল এই মহিলা। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারি মহিলার আসল নাম মাম্পি সাহা মল্লিক। মহিলার বাপের বাড়ী ও শ্বশুর বাড়ি শিলিগুড়িতেই। ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি এনজেপি গেট বাজারে। ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনা জানতে পেরেই মহিলা শ্বশুরবাড়িতে খবর দেয় পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশের সাথে এসে দেখা করে মহিলার স্বামী খোকন মল্লিক। খোকন মল্লিক জানিয়েছেন দুপুর তিনটে নাগাদ তার ছেলে তাকে খবর দেয় যে “মা মদ্যপান করে বাড়িতে এসেছে এবং তার কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে”। স্বামী খোকন মল্লিক এর খবর পেয়ে শিলিগুড়ি শহরের তন্ন তন্ন করে খোঁজে স্ত্রী মাম্পি সাহা মল্লিকে। পরবর্তীতে পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে জানতে পারে তার স্ত্রী চিকিৎসাধীন রয়েছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। খোকন মল্লিকের বক্তব্যঃ সামান্য পারিবারিক অশান্তি হলেই মদ্যপান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড় এই মহিলা এবং তারপর ঘটায় এমন ধরনের নানা ঘটনা।