মালদা , ১৫ জুন : অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশে করার ঘটনায় চীনা নাগরিককে নিয়ে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে পুননির্মাণ করল কালিয়াচক থানার পুলিশ। পাশাপাশি চীনা নাগরিকের মামলাটি তদন্ত করার জন্য রাজ্য এসটিএফকে (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) হস্তান্তর করল জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে মালদা কালিয়াচক থানার মিলিক সুলতানপুর এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ধৃত চীনা নাগরিককে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিভাবে সে ওপার থেকে এপারে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিল তার পুননির্মাণ করে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে আগেই ধৃতকে চিনা গুপ্তচর বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। এবার তাঁদের আশঙ্কা, হানের শরীরের ভিতরে থাকতে পারে কোনও মাইক্রোচিপ বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস। যা নিশ্চিত করতে এবার ধৃতের সিটি স্ক্যান করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে কী কোনও বড়সড় সাইবার হানার প্ল্যান নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন হান জানুই ? এই প্রশ্নেই বাড়ছে চিন্তা ।
পাশাপাশি এই ব্যক্তির শরীরে কোন চিপ ঢুকানো আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তার গোটা শরীর স্ক্যান করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর । পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ধারণা যে এলাকা দিয়ে সে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছে সেটি মরা ভাগীরথী নদী। বর্তমানে বৃষ্টি হওয়ায় নদীতে যথেষ্ট জল রয়েছে। এই অবস্থায় ওই ব্যক্তি যদি নিজে নিজে নদী পার করার চেষ্টা করে তাহলে তার ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। সীমান্ত পার করার জন্য তার নির্দিষ্ট গাইড ছিল । একজন বাংলাদেশী গাইড অন্যদিকে একজন ভারতীয় গাইড । সেই গাইড-এর মাধ্যমেই নদীর যেখানে জল কম আছে সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে ভারতে প্রবেশ করেছে বলে পুলিশের ধারণা । বিষয়টি বিএসএফের নজরে এসে যাওয়ায় সেখান থেকে যে গাইড ছিল সে টাকা দেয় আর ওই চীনা নাগরিক বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যায় । এই চীনা নাগরিক যে সাধারণ কোনো অনুপ্রবেশকারী না তা পুলিশি জেরার মুখে এসেছে। ধৃতের ল্যাপটপ সহ অন্যান্য যেগুলি উদ্ধার হয়েছে সেগুলি চীনে ব্যবহৃত ম্যান্ডারিন ভাষা। উত্তর চীনের তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরে ব্যবহার করা হয় সেই ভাষা।
কিন্তু জিতের ল্যাপটপটি সেই ভাষায় পাসওয়ার্ড দিয়ে লক করা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে সেই লকগুলি ভাঙার চেষ্টা করছে পুলিশ। সেখানে অনেক চ্যাটিং করেছে এই ব্যক্তি । আর তা উদ্ধার করতে পারলেই এই চীনা নাগরিকের রহস্যের সমাধান বেরোবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, তদন্ত নিজস্ব গতিতে চলছে। আপাতত এই মামলাটি এসটিএফ দেখবে। এই নিয়ে এখনই কিছু মন্তব্য করা যাচ্ছে না।